ব্যর্থ কবিদের দলে
- দজিয়েব ২৯-০৪-২০২৪

কবি হতে হলে কবিতা লিখতে হয় মাঝেমাঝে
তবু কবিতা না লিখেও কেউকেউ হয়ে যান কবি;
সেইসব কবির দলে আমিও আছি।

ব্যর্থতার ক্লেদ ভর করে বুকের ভেতর- হানে ব্যথা;
হেন ব্যথা নেয় যা আমি অনুভব করিনি,
মৃত্যুর ব্যথা,
শয্যায় রমনীর সোহাগের ব্যথা,
নির্বংশ হতে চলা পুরুষের নিশব্দ আক্ষেপ,
দুগ্ধপোষ্য অনাথ শিশুর অবিরাম ক্রন্দন,
এমনকি আমার প্রেমিকার হাতের আঙুল থেকে খসে পড়া একটি নখের ব্যথাও আমি অনুভব করেছি।

এতো ব্যথার ভিড়ে আমি কবিদের মতো স্বপ্নীল হতে পারিনি;
আমার কলমের কালি ফুঁড়ে তাই কোনো পংক্তি বের হয়না,
আমি নির্লজ্জের মতো দেখি
কবিতার সারি সারি কমা, সেমিকোলন, দাঁড়ি-
তারা আমাকে দেখেনা।
ইব্রাহিমের দোকান থেকে কেনা আমার সস্তা খাতার পাতা
ভরে যায় নীতিবাগিশ শিক্ষকের লেকচার তুলতে তুলতে;
মাঝেমাঝে অবশ্য সেখানে নিয়মকানুন সুত্রবিহীন কতকগুলি আঁকিবুঁকির স্থান হয়-
তবে সেগুলো আমাকে চিত্রকর বানাতে পারেনি।

কবিতা লেখার চেষ্টা যে আমি করিনি, তা নয়-
রবীন্দ্রনাথ, শেক্সপিয়ার, নজরুল, জীবনানন্দ না হোক
অন্তত রুদ্র, সুনীল কিংবা আবুল হাসানের মতো
আমিও দুচার লাইন লেখার চেষ্টা করেছিলাম।
কিন্তু বয়স বাড়ার সাথে আমার ব্যর্থতার পাল্লাও যে হারে বেড়ে চলেছে
তাতে আমার মতো ছাপোষা মানুষের কবিতা লেখার দুঃসাহস দেখানো
আর এটম বোমার আঘাত সহ্য করে নাগাসাকির ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা প্রায় এক।

কবিতা লিখতে পারি না পারি, কোনোকোনো রাতে
নিঃসঙ্গতার যে তীব্র বেদনা আমাকে গ্রাস করে,
অনাসৃষ্টি সৃষ্টির যে তীব্র আহবান আমাকে আকর্ষণ করে
আমি তা উপেক্ষা করে থাকতে পারিনা;
মৃত্যুর কোনো শব্দ নেয় জেনেও আমি তাই চিৎকার করি,
কবিতার সমস্ত অক্ষর ছুড়ে ফেলে দিয়ে
ব্যর্থ কবিদের দলে নাম লিখিয়েছি আমি।

-২৮.১২.২০১৮,
আটন্ডা, কেশেবপুর, যশোর।

মন্তব্য যোগ করুন

কবিতাটির উপর আপনার মন্তব্য জানাতে লগইন করুন।

মন্তব্যসমূহ

এখানে এপর্যন্ত 0টি মন্তব্য এসেছে।